BY Farzana Aktar
2015-03-16 05:38 PM

সফল হতে হলে যে ১০টি বিষয় নিয়ে আপনি ভাববেন !!!

কাজের মাধ্যমে যখন আপনি অনেক গুলো বছর বিজনেস লিডারদের সাথে কাটাবেন তাদের কাজে কোন সাহায্য করতে না পারলে তাদের কে পর্যবেক্ষন করতে পারবেন, তাদের কে দেখেই জানতে পারবেন কোনগুলো কাজের এবং কোনগুলো নয়। আপনি হয়তো অনুধাবন করতে পারবেন অন্তর্নিহিত চারিত্রিক গুনাবলী এবং নিয়মিত অভ্যাসের বাইরের কিছু বিষয় আছে যা আপনাকে নেতৃত্বের অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপের মধ্যে আপনি কেমন প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেন, আপনি আপনার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন কি করেন না, অন্যের সাথে আপনার ব্যবহার কেমন, কাষ্টমারের সাথে আপনার ব্যবহার কেমন। সঠিকভাবে কাজকে বের করে নিয়ে আসার জন্য আপনি স্বেচ্ছায় কতসময় পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করেন। আপনি ফোকাসড এবং শৃংখলাবদ্ধ, নাকি ভীতু? সহজেই বিরক্ত হয়ে যান অথবা অগোছালো বিষয়গুলোও আপনার সফল হয়ে উঠার পেছনে অনেক অবদান রাখে।

১. অনুসন্ধিৎসু না হওয়া-

সবকিছুই আপনার নজরে থাকুক, যে কোন ছোট বিষয় গুলোর মধ্যেই আপনি সুযোগ দেখতে পাবেন এবং ঠিকই সেটার ব্যবহার করতে পারবেন। নেগেটিভ এবং বোকা মানুষরা কখনোই জিততে পারে না। যা শিখছেন, যা শুনছেন, যা দেখছেন অথবা পড়ছেন তাই নিয়ে প্রতিনিয়ত প্রশ্ন করুন এবং সেই সাথে অবশ্যই কোন উৎস থেকে জানছেন সেটা নিশ্চিত হয়ে নেয়াটাও গুরুত্বপূর্ন।

২. সহজেই ভীত হয়ে যাওয়া-

ব্যবসায় মানসিক চাপ বাড়িয়ে দেয়ার মতো অবস্থায় আপনি প্রতিনিয়ত পরবেন এবং ব্যবসায়িক জগতে এটা প্রচলিত একটা বিষয়। আপনার প্ল্যান মাফিক সবকিছু কাজ করবে না, যা ভেবেছিলেন প্রায়ই সেগুলো ভয়ানক ভাবে ভুল পথে যাচ্ছে। সেই সময়টাতে আপনি যদি আপনার অ্যাড্রিন্যাল হরমোন এর বেড়ে যাওয়াকে নিয়ন্ত্রন করে নিজেকে শান্ত রাখতে না পারেন তাহলে আপনার মধ্যে কিছুর ঘাটতি আছে।

৩. ফ্যানাটিজম-

প্যাশন ব্যবসায়ের সবচেয়ে বড় চালিকা শক্তি। কিন্তু আপনি যদি লাইন অতিক্রম করে অতিমাত্রায় ফ্যানাটিজমে ভোগেন সেটা আপনার সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে অনেক বেশী প্রভাব বিস্তার করবে এবং আপনার জন্য বিপরীত ফল বয়ে আনতে পারে। তাই আপনার মধ্যে যেন ফ্যানাটিজম টা অতিমাত্রায় কাজ না করে।

৪. আলসেমী-

যারা মহৎ কিছু পাওয়ার জন্য কাজ করে তারা সেই সত্যটাকে মেনে নিয়েই শুরু করে যে অনেকটা লম্বা সময় ধরে তাদের কে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। তাই তাদের জন্যে ফোকাসড এবং শৃংখলাবদ্ধ হওয়াটা সবচেয়ে জরুরী। বেশীর ভাগ মানুষ মহৎ কিছুকে পেতে চায় ঠিকই কিন্তু তাদের অলসতার করনে এবং কঠোর পরিশ্রমের অভাবে সেই মহৎ কিছুকে আর অর্জন করতে পারেন না।

৫. খুব তাড়াতাড়ি ফিক্স করার মানসিকতা-

ষ্টিভ জবস বলেছিলেন,“সফল উদ্যোক্তাদের সাথে অসফল উদ্যোক্তাদের অর্ধেকের বেশী পার্থক্য গড়ে দেয় লেগে থাকতে না পারাটা”। আপনি যা করছেন তার জন্য যদি প্যাশিওনেট না হোন আপনি এতে অটল থাকতে পারবেন না। বেশীরভাগ মানুষের মধ্যেই তাড়াতাড়ি সব কিছু করে ফেলার, সবকিছু পেয়ে যাবার প্রবনতা কাজ করে যা আসলে তাকে তার ট্র্যাক থেকেই ছিটকে ফেলে দেয়।

৬. চারিত্রিক দোষ-

আপনার যা কিছু সমস্যা আছে, ঈর্ষা, লাজুকতা, রেগে যাওয়া, বিরক্ত বোধ করা কোন বিষয় যেন অন্যের জন্য বিরক্তিকর হয়ে না দাড়ায়। এটা আপনার ব্যবসাকে যেমন ধ্বংস করবে তেমনি আপনার ক্যারিয়ারকেও। আপনার চারিত্রিক বিষয়গুলোকে আলাদা করে রাখার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

৭. সেলফিসনেস-

আপনি যদি আশা করেন সারা পৃথিবী আপনার পেছনে ঘুরবে আপনি আসলে পেছন দিকে হাটছেন। এমনকি এতটা আত্নকেন্দ্রিক হওয়াটা আপনার অন্যান্য সুবিধাগুলো কে নষ্ট করে দেবে। ব্যবসা আপনার জন্য নয়, আপনি ব্যবসার জন্য। এটা যখন আপনার কাষ্টমারের বিষয়, আপনার পন্য সম্পর্কে তাদের আগ্রহ এবং অভিজ্ঞতার বিষয় আপনি তাকে কিভাবে এর মধ্যে ধরে রাখবেন সেটার চেষ্টা আপনাকেই করতে হবে। আপনি ভাবতে পারবেন না,“আমার কাছে তাকে আসতেই হবে, না এসে কাষ্টমার যাবে কোথায়?” এই বোধ আপনার ব্যবসাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তাই কে কাকে সার্ভিস দিচ্ছে সেই বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে।

৮. অতীত অথবা বর্তমানে বসবাস করা-

আমরা অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহন করতে পারি  কিন্তু অতীতে বসবাস করাটা হলো আত্মঘাতি চিন্তা ভাবনা। ঠিক তেমনি আপনি ভবিষ্যত নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন এবং পরিকল্পনা করছেন কিন্তু আপনি যদি বর্তমান সময়ে কে ফোকাস করে কাজ না করেন আপনি কখনোই আপনার পরিকল্পনা অথবা স্বপ্ন কে অর্জন করতে পারবেন না।

৯. কারো কাছে সাহস পাওয়া-

আপনি শুনতে পাবেন “যাক হচ্ছে”,“সবই ভালো” এবং “ভয় পাবেন না” কিন্তু কেউই আপনাকে বাহবা দেবে না বা কাজের সময় সহায়তা করবে না। তাদের হয়তো অনেক সহায়তা দেবার সুযোগ থাকবে কিন্তু ভয়ানকভাবে সত্য যে আপনি কোনটিই পাবেন না। তাই আপনাকে হিসেবের মধ্যে রেখেই কাজ করতে হবে যে আপনি কারো কাছ থেকে কোন সাহস বা সহায়তা পাবেন না। পথটুকু আপনার একার সিদ্ধান্ত, সাহস যা নেবার আপনাকেই নিতে হবে।

১০. অতিমাত্রায় আবেগপ্রবনতা-

আপনার চামড়া যেন খুব বেশী পাতলা না হয় যে আপনি অতি সহজেই কোন সমালোচনা শুনলেই উত্তেজিত হয়ে যান এবং যে কোন ছোট খাটো বিষয় আপনাকে তটস্থ করে তোলে। আপনি খুবই রূঢ় এক ব্যবসায়িক দুনিয়াতে প্রবেশ করেছেন। সেজন্যই বিজনেস লিডারদের সাধারনত ভালো সেন্স অব হিউমার এবং নম্র মনোভাবের হতে হয়, কারন এটা লিডারদের জন্য একটি আবশ্যিক প্রয়োজনীয়তা। খুব কঠিন কোন বিষয়কেও যেন রসিকতা বোধ দিয়ে হালকা করে নিতে পারেন। তাই সবকিছুকে খুব বেশী সিরিয়াসলি নেবেন না।

অনেক বড় সিইও কিংবা উদ্যোক্তা কে দেখতে পাবেন একটা পর্যায় পর্যন্ত তারা খুব ভালো করে। কিন্তু একটু তাড়াতাড়ি অথবা একটু দেরীতে হলেও মানসিক চাপ যখন চলে আসে, কোন কিছুই ঠিকমতো কাজ করছে না এবং তাদের প্ল্যান মাফিক হচ্ছে না তখন তারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং সেই সাথে ব্যবসাকেও তার ফলশ্রুতিতে ডাউন করতে থাকেন। তার কারন হলো ছোটখাটো কিন্তু গুরুত্বপূর্ন এই বিষয়গুলোতে নজর না দেয়া।

 

তাই নিজেকে সফল করে তুলতে চাইলে বড় বড় বিষয়গুলোর পাশাপাশি ছোট ছোট প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোতেও সমান নজর দিন কারন আপনি আপনার স্বপ্ন কে বাস্তবায়ন করতে পথ চলছেন, কোন বিষয় যেন সেই স্বপ্ন যাত্রার পথ আগলে দাড়াতে না পারে।