BY
2014-09-23 07:33 PM

কেন আপনি শুনবেন বেশী বলবেন কম?

অনেক গবেষনায় দেখা গেছে, বড় নেতা এবং বড় শ্রোতাদের মধ্যে একটা যোগসূত্র আছে। নিজেকে বোঝানোর আগে অন্যকে বোঝাটা আগে জরুরী। কারন অন্যকে বুঝতে পারলেই আপনি বুঝতে পারবেন আপনি তার কাছে নিজেকে কিভাবে তুলে ধরলে সে আপনাকে বুঝতে পারবে। কম বলা এবং বেশী শোনার বেশ কিছু সুবিধা আছে, চলুন জেনে নেই সুবিধাগুলোঃ

১. অন্যকে ভালোভাবে বুঝে নেওয়ার সুযোগঃ  অনেক নেতাই বড় নেতা হয়ে উঠতে পারেন না কারন অধিকাংশ সময়ই তারা মনে করেন, মানুষের সাথে যোগাযোগের মানেই হলো একটা বড় বক্তৃতা দিয়ে ফেলা। সেটা যে কতটা ভুল ধারনা সেটা নিয়ে তারা মোটেও ভাবেন না বরং নিজেকে সবার মাঝে ব্যাপৃত করা যায় তখনই যখন আপনি, অন্যের কথা শুনবেন, যার কথা শুনছেন সেও বুঝতে পারবে আপনি তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন, তার কথার মূল্য আছে আপনার কাছে, এভাবে আপনি তার আরও কাছে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।

২. আপনি নিজেকে গুছিয়ে নিতে পারেনঃ  যখন আপনি প্রথমে অন্যের কথা শুনবেন, আপনি জানতে পারবেন তার বিচার-বিবেচনাবোধ কেমন, তাকে কি বলা যাবে আর কি বলা যাবে না। আপনি নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে আপনার বক্তব্য বলা শুরু করতে পারবেন, আর অপর পক্ষও নিজের সম্পূর্ন বক্তব্য শেষ করতে পারার কারনে আপনার একজন মনোযোগী শ্রোতায় পরিণত হবে।

৩. সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্যঃ  কোন বিষয়ে যদি আপনার কোন সিদ্ধান্ত দেওয়ার থাকে, সেক্ষেত্রে আপনি সবার কথা শুনে নেবার পর নিজের সিদ্ধান্ত দিলে তা অনেক বেশী বাস্তবমুখী হবে। পুরো কথা না শুনেই যদি কোন সিদ্ধান্ত নিতে যান সেখানে ভুল হবার সম্ভাবনা ৯৯%।

৪. অন্যরা বিরক্তবোধ করবে নাঃ  অন্যের কথা বেশী শুনবেন এবং আপনি শুধু যতটুকু অন্যরা শুনতে চায় ততটুকু বলবেন, সেক্ষেত্রে অন্যরাও বিরক্তবোধ করবে না। অনেকে আছেন একটু বেশী বেশী বলার চেষ্টা করেন, ভাবেন বেশী বলতে পারলেই নিজেকে বড় করে দেখানো যায়, সেক্ষেত্রে দেখা যায়। অনেক কথার ভীড়ে আসল যে বিষয়টুকুকে গুরুত্ব দেবার প্রয়োজন ছিল সেটাই ঠিক মতো বলা হয়নি আর অনেক বেশী কথা শুনে অন্যরাও বিরক্ত হয়ে গেছে।

৫. ভুল বোঝাবুঝি থেকে বেঁচে থাকাঃ  অল্প বলার কারণে আপনি নির্দিষ্ট বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে কথা বলতে পারবেন এবং অহেতুক ভুল বোঝাবুঝি থেকে বেঁচে যাবেন। কারন কথা যত বেশী হবে, যে আপনাকে জানে না সে হয়তো আপনার এক কথার আর এক মানে করবে।

৬. অভিজ্ঞতা বাড়ানোঃ  অন্যের কথা শোনার মাধ্যমে আপনি মানুষের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা কে আরো বেশী বেশী জানার সুযোগ পাবেন। সেই সাথে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পারবেন, কারন মানুষের বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা আপনাকে নতুন কিছু জানতে সহায়তা করবে যা আপনি পুথিঁগত বিদ্যায় জানতে পারবেন না।

৭. জনপ্রিয়তা বাড়ানোঃ  আপনি যদি অন্যের কাছে নিজেকে জনপ্রিয় করতে চান তাহলে আজ থেকেই একজন মনোযোগী শ্রোতা হয়ে যান। কারন অধিকাংশ মানুষই বলতে পছন্দ করে এবং তার কথা শোনার একজন মনোযোগী শ্রোতাকেও চায়।

বোবার শক্র নেই, যে শোনে বেশী বলে কম তারও শক্র হবার সুযোগ কম। আমাদের দুটো কান আর একটা মুখ। প্রকৃতিই যখন আমাদের বেশী শোনার সুযোগ করে দিয়েছে, অতএব সেই সুযোগটা আমাদের নেয়া উচিত।