টুইটারের মাধ্যমে যে কোন ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানকে ফলো করা যায়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অথবা ব্যক্তি পর্যায়ের মানুষেরা টুইটারের মাধ্যমে তার ফলোয়ারের সাথে সংক্ষিপ্ত ম্যাসেজের মাধ্যমে তথ্য শেয়ার করতে পারেন। টুইটার মাইক্রো ব্লগিং এর একটি উৎকৃষ্ট উদাহরন যা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার (ফেসবুক, ইউটিউব) এর মতোই।
টুইটার ব্যবহারকারী আপনার কাষ্টমারদের সাথে মার্কেটিং চ্যানেল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। আপনি টুইটারের মাধ্যমে কাষ্টমারের সাথে কনভার্সেসন চালাতে পারেন, আপনার নতুন পন্য সর্ম্পকে জানাতে পারেন, কাষ্টমারের ফিডব্যাক দেখে কাষ্টমার সার্ভিসের উন্নয়ন ঘটাতে পারেন। তবে সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য টুইটার নয়, কারন টুইটারে ব্যবসায়িক অ্যাক্টিভিটি চালানোর জন্য প্ল্যানিং, রিসোর্সিং এবং মনিটরিং এর প্রয়োজন যা ছোটখাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য বোঝা স্বরূপ।
যারা নিজের ব্যবসার মার্কেটিংয়ের জন্য টুইটার ব্যবহার করতে চান, নিচের বিষয়গুলোর মাধ্যমে ধারনা নিয়ে রাখতে পারেন।
টুইটার ব্যবহারের সুবিধা-
১. যোগাযোগ রাখা-
টুইটারের মাধ্যমে আপনি প্রতিনিয়ত আপনার টুইটার ব্যবহারকারী কাষ্টমারদের আপনার প্রতিষ্ঠানের বর্তমান তথ্য দিতে পারছেন। উদাহরন স্বরূপ, এখন নতুন মুভি রিলিজ দেবার সময় অভিনেতা-অভিনেত্রীরা,পরিচালকরা টুইটারের মাধ্যমে পাবলিকের কাছে আকর্ষনীয় করে তোলার জন্য মুভি তৈরি হবার সময়কালীন ইন্টারেষ্টিং বিষয়সমূহ পাবলিকের সাথে শেয়ার করেন এতে খুব সহজেই তার মুভির প্রতি মানুষের মনোযোগ আকর্ষনে সক্ষম হন এবং বিশেষজ্ঞের রিটুইটও পেয়ে থাকেন যা মানুষের আগ্রহকে আরো বাড়িয়ে তোলে।
২. মানুষকে অনুসরন করতে উদ্বুদ্ধ করা-
আপনার ব্যবসায়িক প্রমোশন, নতুন পন্য সম্পর্কে জানানোর মাধ্যমে আপনি কাষ্টমারকে পন্য কিনতে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন। উদাহরন স্বরূপ-ট্যুর অপারেটররা টুইটারের মাধ্যমে দুজন বুকিং দিলে একজন ৫০% ডিসকাউন্ট এভাবে স্পেশাল প্রমোশন অফার করে ক্রেতাকে উদ্বুদ্ধ করে থাকেন।
৩. প্রোফাইল ইমেজের মাধ্যমে মার্কেটিং-
টুইটারে দুইটা প্রোফাইল ইমেজ আপলোড করার সুবিধা আছে। এই সুবিধাটুকু গ্রহন করার মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসায়িক গল্পগুলোকে মানুষের কাছে আরো সহজে এবং কার্যকর ভাবে উপস্থাপন করতে পারেন। আপনার প্রোফাইলে কোম্পানী লোগো ব্যবহার করতে পারেন, যতবার আপনি টুইট করবেন আপনার কোম্পানীর লোগো মানুষের কাছে আরো বেশী পরিমানে দৃশ্যমান হবে এবং আপনার প্রতিষ্ঠান কে মানুষের কাছে আরো বেশী পরিচিত করে তুলবে। আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড ইমেজ হিসেবে আপনার প্রতিষ্ঠানের বিষয়গুলোকে গ্রাফিক ডিজাইন করে ইমেজ তৈরি করে নিন, সেই ইমেজ আপনার মার্কেটিং কে আরো কার্যকর করে তুলবে।
টুইটারে যে বিষয়গুলো আপনার জন্য লক্ষ্যনীয় হবে ঃ
১. আপনার প্রতিষ্ঠানের লোকেশন সম্পর্কে সবাইকে সহজবোধ্য ধারনা দিন, আপনার লোকেশন এমন ভাবে জানিয়ে রাখবেন, যেন অন্য শহর থেকে কেউ আসলও খুব সহজেই আপনার প্রতিষ্ঠান খুজে পেতে পারে।
২. আপনার প্রতিষ্ঠানের ওয়েব এড্রেস আপনার টুইটার একাউন্টে জানিয়ে রাখুন এবং টুইটারের জন্য আপনার ওয়েবসাইটের একটি স্পেশাল ল্যান্ডিং পেজ রাখুন এবং তাদের জন্যে আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বাড়তি কিছু তথ্য রাখতে পারেন যা আপনি জানাতে চান আপনার টুইটার ফলোয়ারদের কে।
৩. টুইটারে ১৬০ শব্দের মধ্যে বক্তব্য সীমাবদ্ধ রাখতে হয় তাই এখানে আপনার প্রতিষ্ঠানের মিশন সর্ম্পকে না বলে আপনার প্রতিষ্ঠান কি কি সুবিধা দেয়, সেবা গ্রহীতারা কিভাবে আপনার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে উপকৃত হতে পারে তা লিখুন।
৪. টুইটারে এগ্রেসিভ ফলোয়ারদের জন্য সীমাবদ্ধতা আছে, তাই খুব বেশী ফলোয়িং করতে যেয়ে আপনার একাউন্ট যেন সাসপেন্ড না হয়ে যায় তাই ফলো করার ক্ষেত্রে ধীরে চলো নীতি অনুসরন করুন।
৫. টুইটারে ফলো করার ক্ষেত্রে কিছু ক্যাটাগরি মেনে নিতে পারেন, আপনি ফলো করতে পারেন আপনার বিজনেস পার্র্টনার, সাপ্লাইয়ার, কন্ট্রাকটর, ভেন্ডর, আপনার প্রতিযোগী কোম্পানীর প্রোফাইল এবং আপনার প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক।
৬. টুইটারে আপনার প্রতিষ্ঠানের সেবা এবং পন্য সম্পর্কে বলুন, কি কি সুবিধা গ্রাহক পেতে পারে সেই সুবিধাগুলো জানান। মানুষকে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো জানান, তাদের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিন।
৭. টুইটারে যেহেতু অল্প কিছু শব্দের মাধ্যমে আপনি লিখতে পারেন, তাই মানুষকে আরো বেশী ডিটেইলস জানাতে চাইলে আপনার কোম্পানীর ওয়েবসাইট ব্লগে লিখুন এবং সেই ইউআরএল একটা সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের সাথে টুইটারে শেয়ার করুন। ফলোয়ার আগ্রহী হয়ে আপনার কোম্পানী ব্লগে লগইন করে পড়বে।
৮. আপনার ব্লগে টুইটারের টুইট বাটন শেয়ার করে রাখতে পারেন যা আপনার ফলোয়ার কে টুইট করতে আরো বেশী সহায়তা করবে।
৯. মানুষ ছবি দেখতে পছন্দ করে, তাই যখনই সুযোগ হবে আপনার ব্যবসায়িক কর্মকান্ডের বিভিন্ন ছবি টুইটারে পোষ্ট করুন, এর জন্য আপনার হাতে থাকা স্মার্র্টফোনের ক্যামেরাটিই যথেষ্ট।
১০. আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানানোর জন্য ভিডিও আর একটি শক্তিশালী মাধ্যম। ইউটিউবে আপনার প্রতিষ্ঠানের ভিডিও আপলোড করে তার লিংটি টুইটার একাউন্টে শেয়ার করে দিন।
১১. আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি ইউনিক হ্যাশট্যাগ তৈরি করে নিন এবং এর মাধ্যমে আপনার ব্যবসার মার্কেটিং করুন। সেই ইউনিক হ্যাশট্যাগে ঢুকে সবাই আপনার প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসা সম্পর্কিত কথোপকথনগুলো দেখতে পারবে এবং আপনার ব্যবসাকে আরো সহজে জানতে পারবে। টুইটারে হ্যাশট্যাগ কাষ্টমার সার্ভিস দেয়ার খুব কার্যকরী একটি পন্থা।
১২. বেশীর ভাগ ব্যবসার জন্যই লোকাল কাষ্টমার অনেক গুরুত্বপূর্ন। টুইটারের (ফোকাস অন পিপল ইন ইউর ওন ব্যাকওয়ার্ড) এর মাধ্যমে আপনার লোকাল কাষ্টমারদের কে আপনি খুজে পেতে পারেন এবং তাদের টার্গেট করে মার্কেটিং করা সহজ হয়।