সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং খুব সহজ একটি মার্কেটিং মাধ্যম, যেখানে আপনাকে প্রতিনিয়ত মানুষের সাথে আরো বেশী কানেক্টটেড থাকতে হয়, প্রতিনিয়ত সচেতন থাকতে হয় কিভাবে আরো বেশী মানুষের কাছে যাওয়া যায়।
আপনি কিভাবে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া স্ট্র্যাটেজিকে আরো বেশী অপটিমাইজ করতে পারেন তার জন্যে কিছু টিপসঃ
১. আপনার জন্য সঠিক সোশ্যাল মিডিয়া নির্বাচন করুন-
ফেসবুক, টুইটার, গুগল প্লাস, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম এর মতো অনেক বেশী সোশ্যাল মিডিয়ার সময়ে সবগুলোতে আপনার পক্ষে থাকা সম্ভব নয় এবং সবগুলো সোশ্যাল মিডিয়া আপনার জন্য যথাযথও নয়। তাই আপনার ব্যবসার জন্য সঠিক কোনগুলো হবে সেগুলো বেছে নিন।
২. অ্যানালিটিকস ব্যবহার করুন-
সোশ্যাল মিডিয়ার ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আপনি কতটুকু সফল অথবা কতটুকু অসফল এগুলো জানার জন্য আপনি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যানালাইজ টুলস গুলো ব্যবহার করতে পারেন। অনেক টুলস কিনতে পাওয়া যায় আবার ফ্রিতেও অনেকে দেয়, আপনি সেগুলো থেকে বেছে নিতে পারেন। অ্যানালাইজ টুলসগুলোর রিপোর্ট গুলো পড়ুন, বোঝার চেষ্টা করুন কোন বিষয় গুলোতে আপনার আরো নজর দেয়া উচিত।
৩. সময় বুঝে পোষ্ট করুন-
আপনার ব্যবসার ধরন এবং লোকেশন হিসেব করে কোন কোন সময়ে কোন পোষ্ট করলে তা কার্যকর হবে ভেবে নিন। বেশীরভাগ প্রতিষ্ঠানই মূলত রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকটিভিটি বেশী চালান। তবে এটা আপনার ব্যবসা এবং কাষ্টমারের ধরনের উপর নির্ভর করে। তাই রিসার্চ করুন আপনি কাদের কে টার্গেট করবেন এবং কোন সময়ে মূল অ্যাকটিভিটি চালাবেন।
৪. দ্বিপাক্ষিকসম্পর্ক তৈরি করুন-
শুধুমাত্র ভিউয়ারদের কে দেখানো আপনার কাজ নয়। ভিউয়ার এর অংশগ্রহন বাড়ান, তাদের কোন প্রশ্ন থাকলে নিয়মিত উত্তর দিন। কারন সোশ্যাল মিডিয়া হলো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জায়গা।
৫. ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করুন-
মানুষের কাছে ছবি ভিডিও দেখাটা অন্যতম আকর্ষনীয় একটি বিষয়। তাই ছবি এবং ভিডিও পোষ্টিং দেয়ার চেষ্টা করুন এবং ভিডিওটা যেন প্রফেশনাল এবং কোয়ালিটি সম্পন্ন হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
৬. সোশ্যাল মিডিয়া কে স্পেশাল করে তুলুন-
আপনার সোশ্যাল মিডিয়া ফলোয়াররা যেন আপনার ছবিতে লাইক দেয়া ছাড়াও অন্য কিছু পেতে পারে তার জন্য আপনার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ডিসকাউন্ট অথবা অন্য কোন প্রমোশনাল অফার রাখতে পারেন।
৭. সোশ্যাল সাইটটিকে ব্যক্তিগত সাইটের মতো ট্রিট করবেন না-
আপনার প্রতিষ্ঠানের সোশ্যাল মিডিয়া সাইটটিতে প্রফেশনাল থাকুন। আপনার ব্যক্তিগত বন্ধুরাও যদি আপনার প্রতিষ্ঠানের সাইটের ফলোয়ার থাকে, তাদের সাথে ব্যক্তিগত কোন কমেন্ট বা আচরন করবেন না। এতে আপনার প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে। আপনাকে মনে রাখতে হবে এটা আপনার প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক সাইট, আপনার ব্যক্তিগত সোশ্যাল সাইট নয়।
৮. সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার নিয়োগ দিন-
যদি আপনার বাজেট থাকে তাহলে আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য একজন অভিজ্ঞ সোশ্যাল মিডিয়া এক্সিকিউটিভ ফুল টাইমের জন্য নিয়োগ দিতে পারেন। সে তার অভিজ্ঞতা দিয়ে আপনাকে অন্যদের তুলনায় সোশ্যাল মার্কেটিংয়ের পূর্ন সুবিধাগুলো দিতে পারবে।
৯. ব্যবসায়ী সহযোগী তৈরি করুন-
আপনার ব্যবসার ধরনের সাথে মিল আছে এমন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান যারা আপনার ব্যবসার প্রতিযোগী নয় তাদের সাথে সহযোগী হিসেবে সম্পর্ক গড়ে তুলুন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। সহযোগীতার এই সম্পর্ক আপনার জন্য ভালো কোন সুযোগ যেমন এনে দিতে পারে তেমনি আপনি বুঝতে পারবেন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো কিভাবে কাষ্টমারের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলছে।
১০. সেলস প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করবেন না-
সোশ্যাল মিডিয়া আপনার জন্য সরাসরি পন্য বিক্রির প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার না করে কাষ্টমারের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যম হিসেবে বেছে নিন। এখানে কাষ্টমারকে আপনার পন্যের তথ্য, আপনার পন্য এবং সেবার সর্ম্পকে অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য, প্রমোশনাল সার্ভিস, কাষ্টমারের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর এবং তাদের কে আনন্দ দেয়ার একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করুন।
১১. প্রোফাইল সম্পূর্ন করুন-
আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার পেজ প্রোফাইলে যত বেশী সম্ভব তথ্য প্রদান করুন। এর মাধ্যমে অন্যের কাছে আপনার ব্র্যান্ডের সুনাম এবং ম্যানেজমেন্টের ভাবমূর্তি উন্নয়নে সহায়ক হবে। মানুষ যার সম্পর্কে যত বেশী জানতে পারে তার উপর তত বেশী নির্ভর করতে পারে।
১২. আপনার বিজেনেস প্ল্যান এ সোশ্যাল মিডিয়া অর্ন্তভূক্ত করুন-
নতুন ব্যবসা শুরু করা অথবা প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা দুটোর উন্নতির জন্যেই নতুন নতুন কাষ্টমারের প্রয়োজন হয়। তাই আপনার ব্যবসায়িক পরিকল্পনায় সোশ্যাল মিডিয়া অর্ন্তভূক্ত করুন এবং বিভিন্ন পিরিয়ডের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের ভিন্ন ভিন্ন পরিকল্পনা তৈরি করুন। এভাবে আপনি আপনার ব্যবসার মার্কেটিংয়ের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার সর্ব্বোচ্চ সুবিধাগুলো নিতে পারবেন।
১৩. ভূল বানান ঠিক করে নিন-
আপনার কনটেন্টগুলো পোষ্ট দেবার আগে বানান বা অন্যান্য আর কোন ভূল আছে কিনা প্রয়োজনে একবারের জায়গায় দুইবার চেক করুন। এই ছোটখাটো বিষয়গুলোতে নজর রাখতে পারলে আপনি অনায়াসে অনাহূত এবং অস্বস্তিকর বিষয়গুলোকে এড়াতে পারবেন।