মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন হলো হাতে ব্যবহার উপযোগী ডিভাইসের (ট্যাবলেট কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, পারসোনাল ডিজিটাল অ্যাসিসট্যান্স ইত্যাদি) জন্য সফটওয়্যার প্রোগ্রাম।
বর্তমানে ডিভাইস হিসেবে মোবাইল ফোন বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠায়, মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্টও মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। মোবাইল সফটওয়্যার ডিসট্রিবিউশন প্লাটফর্মের (অ্যাপল অ্যাপ ষ্টোর, গুগল প্লে, উইন্ডোজ ফোন মার্কেটপ্লেস এবং ব্ল্যাকবেরি অ্যাপ ওয়ার্ল্ড) মাধ্যমে মিলিয়নেরও বেশী অ্যাপ এখন বিক্রি অথবা ডাউনলোডের জন্য মানুষের হাতের নাগালে।
শুধুমাত্র একা আইফোন অ্যাপ ষ্টোরেই বিক্রি অথবা ডাউনলোডের জন্য ৭ লাখেরও বেশী অ্যাপ রয়েছে।
ব্যবসার ক্ষেত্রে দিনে দিনে এখন মোবাইল অ্যাপ খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কারন স্মার্র্ট ফোনের জনপ্রিয়তা এবং ব্যবহার বাড়ার কারনে কাষ্টমাররা এখন মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করে তার ব্যাংকিং করছেন মোবাইলে, অনলাইনে কেনাকাটা, তথ্য খোজা অথবা ইউনিভার্সিটি অ্যাডমিশনও হচ্ছে এখন ফোনের মাধ্যমে। কনজ্যুমার এখন পন্যের কোয়ালিটি এবং দামের পার্থক্য সহজেই বুঝতে পারছেন মোবাইলে।
এখন কিছু ছোট এবং মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করছে তাদের কাষ্টমারদের উন্নত সার্ভিস এবং সহায়তা দেবার জন্যে। কেউ কেউ নিজস্ব অ্যাপ ডেভেলপ করছে তাদের নিজের কাজে অথবা প্রোডাক্ট হিসেবে বিক্রি করার জন্য।
আপনার ব্যবসার জন্য মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপ করতে চাইলে অথবা অন্য কারোটা ব্যবহার করতে চাইলে যে টিপসগুলো মাথায় রাখতে পারেন-
আপনার এপ্রোচ প্ল্যান করুন-
একটি পরিকল্পনা তৈরি করার ভালো দিক হলো এর মাধ্যমে আপনি পরিষ্কার ধারনা নিতে পারবেন কেন এবং কিভাবে আপনি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করবেন। এই পরিকল্পনা করার মাধ্যমে আপনি হয়তো বুঝতে পারবেন মোবাইল অ্যাপ আপনার ব্যবসার জন্য প্রয়োজন নেই, আর যদি দেখেন আপনার প্রয়োজন আছে তাহলে আপনি কিভাবে সফল হবেন সেটা নিয়েও যাচাই করার সুযোগ পাবেন।
আপনার অন্যান্য মার্কেটিং এর সাথে অ্যাপগুলো ইন্টিগ্রেট করুন-
মোবাইল অ্যাপ তখনই সবচেয়ে কার্যকরী যখন এটা অন্যান্য বিজনেস টুলস, মার্কেটিং প্ল্যান এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যবহার করা যায়। এমনকি মোবাইল অ্যাপ কে স্বতন্ত্র্যভাবে মার্কেটিং ক্যাম্পেইন অথবা ষ্ট্র্যাটেজি হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এটা আপনার মনে রাখতে হবে মার্কেটিং ষ্ট্র্যাটেজি হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলে এটাকে বাজারে পরিচিত করার জন্য আগে আপনাকে মার্কেটিং ক্যাম্পেইন চালাতে হবে।
প্রতিবন্ধকতাগুলো মনে রাখবেন-
আপনার মোবাইল এপ্লিকেশনটিকে সুনির্দিষ্ট মানুষগুলোর কাছে পৌছানোর উপায় হলো স্মার্র্ট ফোন অথবা ট্যাবলেট ব্যবহারকারীদের প্রোফাইল। এরপর আপনাকে ভাবতে হবে তারা কোন প্লাটফর্মটা (আইফোন, এন্ড্রয়েড, ব্ল্যাকবেরী ইত্যাদি) বেশী ব্যবহার করে। অ্যাপ এর মাধ্যমে মার্কেটিং এর বিষয়ে ভাববার সময় এটাও মাথায় রাখবেন যে আপনার টার্গেটেড মানুষগুলোর শতকরা কতজন স্মার্র্টফোন অথবা ট্যাবলেট ব্যবহার করে। যারা ব্যবহার করেনা তাদের জন্য আপনি অ্যাপ এর বদলে অন্য কোন মার্কেটিং পলিসি ব্যবহার করবেন।
ডাউনলোডারদের কাছে আপনার এপ্লিকেশনের আকর্ষন বাড়ান-
কোন এপ্লিকেশন নিজে নিজেই জনপ্রিয় অথবা বিক্রি হয়না। আপনার একটি পরিকল্পনা থাকতে হবে কিভাবে আপনি আপনার অ্যাপগুলো টার্গেট করা অডিয়েন্সের কাছে নিয়ে যাবেন-
আপনার অ্যাপ বানানোর জন্য আপনার কাষ্টমারকে অথবা আপনার ব্যবহারের জন্য হলে কি কি চান তা লিখে প্ল্যান করুন। আপনি কাষ্টমার সর্ম্পকে কোন বিষয়ে ভালো জানেন যেটা আপনি অ্যাপ আকারে কাষ্টমারকে দিতে পারেন এবং কাষ্টমারকে সেটা আকর্ষন করবে অথবা আপনার অ্যাপটি কিভাবে তৈরি করলে কাষ্টমারকে এমন সার্ভিস দেয়া যায় যেটা আপনি সামনে থেকে দিতে পারতেন।
আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য অ্যাপ ব্যবহার-
অ্যাপ শুধুমাত্র কাষ্টমারকে সার্ভিস দেয়া ছাড়াও আপনার ব্যবসার প্রয়োজনীয় একটি টুল হতে পারে যার মাধ্যমে আপনি বা আপনার ষ্টাফরা আরও বেশী দক্ষ এবং কার্যকর ভাবে তাদের কাজ সম্পন্ন করতে পারবে। অতএব আপনি প্ল্যান করুন কিভাবে আপনার ব্যবসাতে অ্যাপ কে ব্যবহার করতে পারেন। যদি দেখতে পান, যে কোন স্থান থেকেই আপনার ব্যবসার ডাটা ব্যবহার করতে পারলে ষ্টাফের সুবিধা হবে অথবা যে সফটওয়্যার আপনি ব্যবহার করেন সেটাকে মোবাইলের মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগী করতে পারলে সুবিধাজনক হবে তবে সেটা চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
মোবাইল অ্যাপ রেজাল্ট ট্র্যাক রাখার চেষ্টা করুন-
আপনার মোবাইল অ্যাপের ব্যবহার ব্যবসাতে কেমন প্রভাব ফেলছে সেটা মনিটর করুন যেন আপনি বুঝতে পারেন কোনটা কার্যকরী হচ্ছে আর কোনটা কার্যকরী হচ্ছে না।
আপনি খেয়াল রাখুন কি পরিমান মানুষ আপনার অ্যাপ ডাউনলোড করছে, তবে তারচেয়ে জরুরী বিষয় হলো আপনার পন্য বিক্রিতে সেটা কতটুকু প্রভাব ফেলতে পারছে। মানুষকে আকর্ষন করার জন্য আপনার অ্যাপে আপনি কুপন অথবা কোন প্রমোশনাল কোড অফার করতে পারেন, তারপর ওয়েবসাইট অ্যানালেটিক টুলস ব্যবহার করে সেলস মনিটর করে দেখতে পারেন এই প্রোমোশন আপনার সেলস এ কি প্রভাব রাখতে পারছে।