সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ইন্টারনেট ভিত্তিক ব্যবসায়িক কর্মকান্ড এবং সেই সাথে ব্যবসায়ে ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তা। নতুন নতুন ওয়েবসাইট তৈরি করে বিক্রয় করা অথবা চলমান কোন ব্যবসার ওয়েবসাইট কেনা-বেচাও এখন প্রতিনিয়ত হচ্ছে। কিন্তু অন্যান্য কেনা-বেচার সাথে ওয়েবসাইট কেনা-বেচার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে কারন অন্যান্য পন্যের তুলনায় ওয়েবসাইটের সঠিক মূল্য নির্ধারন করা সহজসাধ্য নয়। যদি আপনার কোন ওয়েবসাইট বিক্রয় করার কথা ভাবেন তাহলে কিভাবে তার জন্য একটি মূল্য নির্ধারন করবেন এবং কিভাবে বিক্রয় করবেন।
চলুন জেনে নেই কিভাবে-
১. ওয়েবসাইট ট্র্যাফিক পরিসংখ্যান রিপোর্ট তৈরি করুন-
আপনার ওয়েবসাইটের ট্রাফিক রিপোর্ট তৈরি করুন, যেখানে নিচের বিষয় গুলো আপনার বিবেচনায় রাখবেনঃ
২.প্রতিষ্ঠানের ফাইনান্সিয়াল রিপোর্ট
যদি সুযোগ থাকে তাহলে প্রথম থেকেই ওয়েব সাইটর জন্য বুককিপিং তৈরি করুন, এক্ষেত্রে আপনার ডোমেইন-হোষ্টিং বাবদ যে খরচ এছাড়া মেইন্টেন্যান্সে কোন খরচ হলে সেগুলোর হিসাব রাখার পাশাপাশি অ্যাডভার্টাইজিং বা অন্যান্য কোন খাত থেকে আয় করে থাকলে সেগুলো ভাউচার সহ হিসাব প্রস্তুত করার অভ্যাস রাখুন। আপনার ওয়েবসাইটের ক্রেতা যদি খুব সিরিয়াস হয় তাহলে আপনি অনায়াসেই লাভ-ক্ষতির হিসেব তার সামনে তুলে ধরতে পারবেন।
৩. ভবিষ্যত সম্ভাবনা-
আপনি যদি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সম্ভাব্য ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষন করতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার সাইটের ইতিহাস, কোন লক্ষ্য সামনে রেখে তৈরি করেছিলেন, সেই লক্ষ্যের কতটুকু নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে অর্জন করেছেন, এর ভবিষ্যত সম্ভাবনা কেমন, আপনি কেন ওয়েবসাইট বিক্রয় করতে চাইছেন ইত্যাদি বিষয় গুলো তুলে ধরে “ফিউচার অব দিজ ওয়েবসাইট” ক্যাপশনে একটি রিপোর্ট তৈরি করে ফেলুন, যেখানে আপনি উল্লেখ করবেন এই সাইটটি আপনার কিছু সীমাবদ্ধতার কারনে রাখতে পারছেন না কিন্তু এর ভবিষ্যত সম্ভাবনা অনেক, তার জন্যে কিছু সম্ভাবনার কথা উদাহরন হিসেবে বলে রাখুন যেন সহজেই ক্রেতা বুঝতে পারে।
৪.ক্রেতা খুজুন-
আপনার ওয়েবসাইটের মূল্য আপনি যখন নির্ধারন করে ফেলেছেন এবার সম্ভাব্য ক্রেতাদের খোজ করুন। দেখুন বাজারে আপনার সাইটের মতো এই ধরনের সাইটে চাহিদা কেমন আছে।
ক্রেতা খোজার জন্যে দুটি বিষয় হিসেবে রেখে খুজতে পারেন, যেমন-
৪.১ আপনার ইন্ডাষ্ট্রির মধ্যে-
আপনার যে ধরনের ব্যবসার কাজে আপনি ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন এক্ষেত্রে আপনার পন্য যদি লোকাল হয় সেক্ষেত্রে লোকাল ব্যবসায়ীদের সাথে ই-মেইল পাঠাতে পারেন, আপনার অ্যাডভার্টাইজার যারা আছেন তাদের কে জানাতে পারেন যে আপনি ওয়েবসাইট বিক্রয় করবেন এছাড়া বড় কিছু প্রতিষ্ঠান কে বেছে নিন যাদের এক্ষেত্রে আগ্রহী হবার সম্ভাবনা আছে বলে আপনি মনে করেন এবং যোগাযোগ করুন।
আপনি যদি সম্ভাব্য ক্রেতাকে বোঝাতে পারেন যে এক্ষেত্রে তার নতুন ক্রেতা পাবার সুযোগ কত বেশী এবং ব্যবসায়ের সম্ভাবনা কত বেশী তাহলে সহজেই মানুষকে আগ্রহী বানাতে পারবেন।
৪.২ আপনার ইন্ড্রাষ্ট্রির বাইরে-
যদি আপনার ইন্ডাষ্ট্রির মধ্যে আগ্রহী ক্রেতা খুজে না পান সেক্ষেত্রে বাইরে দেখুন, তবে আপনার ইন্ডাষ্ট্রির বাইরে ক্রেতা খোজার সময় তৈরি থাকুন অনেক বেশী প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য কারন ক্রেতা হয়তো আগ্রহী আপনার ইন্ডাষ্ট্রি সম্পর্কে কিন্তু তার ধারনা কম, সেক্ষেত্রে চলতি ব্যবসায়ী অল্প কথাতেই যেটা সহজে বুঝবে, ভবিষ্যত ব্যবসায়ী ততটা ধারনা রাখেন না, অতএব তার অনেক প্রশ্ন থাকবে যেগুলোর উত্তর আপনাকে দিতে হবে।
আপনার ইন্ডাষ্ট্রির বাইরে যদি বিক্রয় করতে চান, অনলাইন কেনা বেচার প্লাটফর্মগুলোকে বেছে নিতে পারেন, e-bay এর মতো বড় প্লাটফর্মগুলোতেও এখন ওয়েবসাইট কেনা-বেচার জন্য সুযোগ আছে তবে এখানে আপনাকে বিডের মাধ্যমে ওয়েবসাইট বিক্রয় করতে হবে।
৫. বিক্রয় করার ক্ষেত্রে যে বিষয় গুলো মাথায় রাখবেন-
৫.১ ওয়েবসাইট বিক্রয়ের টাকা কখন এবং কিভাবে পাবেন-আপনি কি নগদে, চেকে অথবা অনলাইনে পেমেন্ট পাবেন? কোন মাধ্যমে আপনি নিতে আগ্রহী অথবা আপনার ক্রেতা দিতে আগ্রহী নিশ্চিত হয়ে নিন।
৫.২ লিগ্যাল কাগজপত্র তৈরি করুন- মালিকানা কাকে দিচ্ছেন কত টাকার বিনিময়ে দিচ্ছেন, কত তারিখে দিচ্ছেন সেই মতো কাগজপত্র তৈরি করুন, প্রয়োজনে কোন আইনজীবীর সহায়তা নিন যেন ভবিষ্যতে কোন আইনি জটিলতায় পড়তে না হয়।
৫.৩ কতদিন পর্যন্ত আপনি ওয়েবসাইট সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে সহায়তা করবেন- আপনার কাগজে উল্লেখ করুন কতদিন পর্যন্ত ক্রেতাকে আপনি সাহায্য করবেন এবং কোন ধরনের সহায়তা, কোন কোন বিষয়ে সহায়তা করবেন নির্ধারন করে নিন।
৫.৪ কারিগরী বিষয়ে সচেতনতার সাথে উল্লেখ করুন- একটি ওয়েবসাইটের আপনি অনেক ধরনের টুলস ব্যবহার করেন সেগুলো বিষয়ে কি করবেন উল্লেখ করুন। আপনার ওয়েবসাইটের ওয়েবহোষ্টিং, ডোমেইন নেম, অটোরেসপন্ডার, ইমেইল লিষ্ট, সফটওয়্যার, সাবস্ক্রিপশন, পেইড ডিরেক্টরী লিষ্ট যেগুলো আপনি নতুন ক্রেতাকে সরবরাহ করবেন তার সবকিছু কে সচেতনতার সাথে উল্লেখ করুন।