আপনার মূল্যবান কাষ্টমার কে আকর্ষন করা, আপনার পন্য বা সেবার প্রতি তাদের আগ্রহ কে ধরে রাখা বর্তমান সময়ে বেশ কঠিন একটি কাজ, কারন এখনকার প্রতিযোগীতার সময়ে আপনার প্রতিযোগীরা ও ক্রমাগত কাষ্টমারের মনোযোগ আকর্ষন করতে প্রয়োজনীয় সবকিছু করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। আপনি অনেক চেষ্টা করে আপনার মূল্যবান কাষ্টমার কে আপনার সাইটে আনার পর যদি কাষ্টমার আপনার সাইটে বেশীক্ষন না থাকে তাহলে আপনার অ্যাডভার্টাইজিং যেমন বিফলে গেল এই কাষ্টমারটাও আর আপনার সাইটে ফেরত আসবেনা।
অতএব আপনার ওয়েবসাইটের ডিজাইন এমন হওয়া উচিত যেন কেউ আপনার সাইটে ঢুকে যাবার পর সে যেন আপনার সাইটে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরন পায়, যেন অসহায় বোধ না করে, যেন সহজেই যা চান যেভাবে চান করতে পারেন, যা আছে ঠিকমতো দেখতে পারেন, সে ব্যবস্থা রাখা।
চলুন আমরা জানার চেষ্টা করি সাধারনত কেন কাষ্টমার ওয়েবসাইটে ঢুকার পরও বেশীক্ষন থাকতে চায় নাঃ
১. সঠিক ভাবে নেভিগেশন না থাকা-
২. অনেক বেশী বিজ্ঞাপন দেয়া-
অনেক বেশী বিজ্ঞাপন হয়তো আপনার কিছু বাড়তি অর্থ দিবে কিন্তু আপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন যে ভিজিটর তাদেরকে আপনি ধরে রাখতে ব্যর্থ হবেন। খেয়াল রাখবেন আপনার ওয়েব সাইটে ঢুকেই যেন প্রথমে আপনার ইউজাররা আগে অ্যাডের মুখোমুখি হবার অভিজ্ঞতা না পান। আপনার সাইটের আকর্ষনীয় কনটেন্ট গুলো যেন অন্যান্য এ্যাডের আড়ালে ঢাকা পড়ে না যায়, এতে ইউজাররা সহজে আপনার কনটেন্ট গুলো দেখতে পারেন না এবং বিরক্ত হয়ে হয়তো যে কনটেন্টগুলো্ দেখবেন ভাবছিলেন সেগুলো আর দেখবেনা। আপনার কনটেন্ট এর চেয়ে বেশী প্রাধান্য পায় এমন এ্যাড না দেয়ার চেষ্টা করুন।
৩.শর্তাবলী, রিফান্ড পলিসি এবংএ্যাবাউট আস এর মতো গুরুত্বপূর্ন পেইজ না থাকা-
আপনার ওয়েবসাইটে শর্তাবলী থাকলে সেটা আপনার ওয়েবসাইটে মূল্যায়ন বাড়াবে। আপনি কোন পন্য বা সেবার অফার করে থাকলে সেটার রিফান্ড পলিসি উল্লেখ করুন, এতে আপনার কাষ্টমারের আপনার উপর বিশ্বাস আসবে। মানুষ যাকে জানে তাকেই সহজে বিশ্বাস করে, তাই প্রথমেই এ্যাবাউট আস পেজের মাধ্যমে ধারনা দিয়ে রাখুন আপনার ব্যবসা সম্পর্কে, আপনার প্রতিষ্ঠানের ধরন সম্পর্কে, যেন মানুষ সহজেই জানতে পারে আপনাকে।
৪. অটো সাউন্ড এবংভিডিও প্লে হওয়া-
অনেক ওয়েবসাইটে ঢুকার সাথে সাথে সাউন্ড অথবা ভিডিও অটো প্লে হয়ে যায় যেটা ইউজার এর জন্য খুবই বিরক্তিকর হয়।
আপনার সাইটে সাউন্ড অথবা ভিডিও থাকুক কিন্তু সেটা দেখা না দেখার স্বাধীনতা টুকু ইউজার কে দিন। ইউজার চাইলে সাউন্ড/ভিডিও অন করবে।
৫. লোডিং টাইম বেশি লাগা-
ওয়েবপেজ লোডিং হতে বেশী সময় নিলে কাষ্টমার ধৈর্য রাখতে পারেনা, খুব বেশী হলে একজন কাষ্টমার ৫/৬ সেকেন্ড অপেক্ষা করে। আপনার ওয়েবসাইট লোডিং টাইমের দিকে খেয়াল রাখুন, অহেতুক কনটেন্ট দিয়ে সাইট ভারী করবেন না। সৌভাগ্যক্রমে এখন অনেক টুলস পাওয়া যায় যা দিয়ে অপটিমাইজের মাধ্যমে আপনার সাইটে লোডিং টাইম বেশী লাগা রোধ করতে পারবেন।
৬. ওয়েবপেজের কালার কম্বিনেশন-
ওয়েবপেইজের কালার যেন বিরক্তিকর অথবা ক্লান্তিকর কোনটাই না হয় সেটা খেয়াল রাখতে হবে। ওয়েবপেজের কালার নির্বাচনের ক্ষেত্রে ওয়েবসাইটের সবগুলো ওয়েবপেইজের কালার এর ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন, চোখের জন্য আরামদায়ক এবং একই সাথে আকর্ষনীয় এমন কোন সফট কালার নির্বাচন করুন।
অনেক সাইটে ঢুকার সময়ে শুধু সাইন আপ ছাড়াও অ্যাডের মধ্যেও পপ আপ থাকে যা খুবই বিরক্তিকর ভিজিটরের জন্য, কোন ভিজিটরই এ ধরনের পপ আপ পছন্দ করে না। আপনার মূল লক্ষ্য যখন ভিজিটরের সুবিধা ভাবা, অতএব বেশী পপ আপ এড়িয়ে চলুন।
আপনি এখন জানেন কি কি বিষয় আপনার কাষ্টমারের বিরক্তি উদ্রেক করে এবং কেন তারা সহজেই সাইট ছেড়ে যায়, তাই আপনার চেষ্টা থাকবে সেই বিষয় গুলোতে নজর দেয়া যেন ইউজার সন্তুষ্ট থাকে। চেষ্টা করুন ইউজার ফ্রেন্ডলি, প্রফেশনাল একটি চমৎকার ওয়েবসাইট তৈরি করতে, দেখবেন আপনার ভিজিটর আপনার সাইটে বেশী সময় ব্যয় করছেন, নতুন ভিজিটরের পাশাপাশি পুরনোরাও বার বার আপনার সাইটে ফিরে আসছেন এবং আপনার সেবা নিতে আগ্রহী হচ্ছে।