আপনার ছোট একটি ব্যবসার জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করার ক্ষেত্রে ,আপনি নিশ্চই চাইবেন আপনার প্রত্যেকটা টাকা যেন কাজে লাগে।
চমৎকার ডিজাইন এবং ইউজার বান্ধব একটি ওয়েবসাইট যদি আপনার থাকে তাহলে আপনার ব্যবসার জগতে ভ্রমন শুরু হলো মাত্র। আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটের সময় যদি কারো ভালো লাগে, তার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোতে যদি আপনি আগেই খেয়াল রাখতে পারেন তবে আজ যদি সে আপনাকে রেসপন্স নাও করে ভবিষ্যতে সে আপনার কাছে যেন আসে তার পথ তৈরি আপনি ঠিকই করতে পারলেন। কারন প্রথম দেখাতে ভালোলাগাটা মানুষ মনে রাখে এবং ইউজার বাড়াতে এটা অন্যতম কার্যকরী উপায়।
আজ আপনার ব্যবসা ছোট, তাই তার ওয়েবসাইট ও ছোট, সময়ের সাথে সাথে আপনার ব্যবসা বড় হতে থাকবে সেই সঙ্গে আপনার সাইটও। তাই প্রথমেই ওয়েবসাইট তৈরি করার সময় ভবিষ্যতের কথাটা মাথায় রাখতে হবে আপনাকে।
আপনার মূল্যবান ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য যে ষ্টেপগুলো আপনি অনুসরন করবেন ঃ
১. আপনার ডোমেইন নেম রেজিষ্ট্রেশন করুন –
সবার প্রথমে আপনার ব্যবসার যে নাম দিয়ে আপনি ওয়েবসাইটে দেখাতে চান সেই নাম রেজিষ্ট্রেশন করুন। ডোমেইন নেম রেজিষ্ট্রেশন করার জন্য বিভিন্ন অনলাইন প্রতিষ্ঠান আছে এর কোন একটিতে আপনি বার্ষিক ফি প্রদানের মাধ্যমে সেই নামের স্বত্ব রেজিষ্ট্রেশন করতে পারবেন, যদি আপনার আগেই কেউ ওই নেম রেজিষ্ট্রেশন করে থাকে সেক্ষেত্রে আপনাকে অন্য আরেকটি নাম বেছে নিতে হবে।
তবে ডোমেইন নেম রেজিষ্ট্রেশন করার জন্য কোন কোম্পানী বা অর্গানাইজেশন থাকাটা বাধ্যতামূলক কিছু না, যে কেউ চাইলে ডোমেইন নেম রেজিষ্ট্রেশন করতে পারে।
২. হোষ্টিং প্যাকেজ নির্ধারন করুন –
ওয়েব হোষ্টিং হলো একটি কোম্পানী, যে অনেকগুলো কম্পিউটার দিয়ে ইন্টারনেট এ সংযুক্ত থাকে। আপনি যখন তাদের সার্ভারে আপনার ওয়েবপেজটি রাখবেন, পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে যে কেউ আপনার এ ওয়েবপেজটিতে সংযুক্ত হতে পারবে এবং দেখতে পাবে। হোষ্টিং পাওয়ার জন্য আপনাকে হোষ্টিং প্রোভাইডারের সাইটে সাইন আপ করে একটি একাউন্ট তৈরি করার মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েব পেজের জন্য একটি হোম তৈরি করে নিতে পারবেন। হোষ্টিং কোম্পানীগুলোর বিভিন্ন প্যাকেজ আছে আপনি আপনার জন্য যে প্যাকেজ সুবিধাজনক মনে করেন, সেই প্যাকেজ নিতে পারেন।
নিচে হোষ্টিং এর জন্য বর্তমানে জনপ্রিয় কিছু সাইটের নাম দেখে নিতে পারেন ঃ
* GoDaddy.com
* BlueHost.com
* HostGator.com
* 1&1 Internet Hosting
* Hostmonster.com
* DreamHost.com
* Midphase
* Yahoo!web hosting
* FatCow webhosting
* Register.com
এছাড়া ও ওয়েব হোষ্টিং এর জন্য আরো অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা, বিভিন্ন প্যকেজের মাধ্যমে স্বল্প খরচে হোষ্টিং প্রদান করে ।
৩. ওয়েবসাইট নেভিগেশন / ওয়েবসাইট কনটেন্ট নিয়ে ভাবুন –
আপনার ওয়েবসাইট কেমন হবে, একটা কাগজে স্কেচ করুন, যতগুলো পারেন কনটেন্ট লিখুন। এবার ভাবুন আপনি কি কি কনটেন্ট রাখতে চান, আপনি ইউজার কে কিভাবে নেভিগেট করতে চান, ইউজার প্রথমে ঢুকে আপনার সাইটে কি দেখবে, তারপর সে কি দেখতে চাইতে পারে সেটা ভেবে নিয়ে আপনি আপনার নেভিগেশন ডিজাইন করবেন। মনে রাখবেন ইউজাররা খুব অস্থির, আপনার ওয়েবপেজে ঢুকার পর আপনি আপনার ইউজার কে কিভাবে ধরে রাখবেন সে পরিকল্পনা আপনার থাকতে হবে।
৪. আপনার ওয়েবপেজগুলোর ডিজাইন করুন –
আপনার ডোমেইন নেম রেজিষ্ট্রেশন এবং ওয়েব হোষ্টিং করার পর আপনার পদক্ষেপ হবে আপনার ওয়েবসাইটের ডিজাইন করা । আপনি নিজে যদি করতে না পারেন সেক্ষেত্রে কোন ওয়েব ডিজাইনার কে দিয়ে আপনি এ ডিজাইন করিয়ে নিতে পারেন ।
ওয়েবপেজ ডিজাইন এবং এডিট করার জন্য নিচের সফটওয়্যার প্লাটফর্মগুলোলো বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় ঃ
৫. ওয়েবসাইট টেষ্টিং –
যদিও ওয়েবসাইট টেষ্টিং ওয়েব ডিজাইন সাইকেলের অংশ, তবে আপনার ওয়েবসাইট শুরুর ক্ষেত্রে এটা ও প্রয়োজনীয় বিষয়। আপনার ওয়েবপেজগুলো আপনি বড় বড় ব্রাউজার কে মাথায় নিয়ে তৈরি করেছেন এখন প্রয়োজন এগুলো টেষ্ট করে দেখা যে ব্রাউজারে এটা কেমন কাজ করছে। ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের নতুন ভার্সন, গুগল ক্রোম, ফায়ারফক্স, ওপেরা, সাফারি। আপনি কোন ফি ছাড়াই এগুলো টেষ্ট করে নিশ্চিত হতে পারবেন আপনি ঠিক যেমন চাইছেন তেমনি ভাবে আপনার ওয়েবপেজ ভিজিটর মেশিনগুলোতে কাজ করছে কিনা ।
যদি আপনি চান আপনার ওয়েবসাইট সব ওয়েব ব্রাউজারের সব আপডেট ভার্সন গুলোর সাথে ভবিষ্যতে একই ভাবে রেসপন্স করবে তাহলে validating the code এর কথা ভাবুন আপনার ওয়েবপেজগুলোর জন্য । সাধারন ভাষায় এর মানে হলো, আপনার ওয়েবপেজের আন্ডারলায়িং কোড চেক করে নিন, যাকে বলে “HTML” এবং “CSS” চেক করে দেখে নিন এর কোন এরর নেই। আপনি অনলাইনে ভ্যালিডেটি চেক করে নিতে পারেন HTML validators and checkers এবং CSE HTML validator থেকে। ভ্যালিডেটর আপনাকে বলবে আপনার ওয়েবপেজে এরর আছে তবে এরর খুজে পাওয়াটাই সবচেয়ে বেশী কষ্টকর ।
৬. ক্রেডিট কার্ড গ্রহনের মাধ্যমে পেমেন্ট গ্রহন সুবিধা রাখা –
আপনি যদি পন্য অথবা সেবা বিক্রি করেন তাহলে কিভাবে টাকা গ্রহন করবেন সে বিষয়টা নিয়ে ও আপনাকে ভাবতে হবে। অনেক অনলাইন সেবা দাতা প্রতিষ্ঠান আছে যারা ডেলিভারি দেয়ার সময় ক্যাশ পেমেন্ট গ্রহন করে, আবার অনেকে অনলাইনে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট গ্রহন করে, অতএব আপনি নির্ধারন করুন আপনি কোন পদ্ধতিতে পেমেন্ট নিবেন ।
তবে আপনি দেশের বাইরের কাষ্টমারদের কাছে যদি বিক্রি করতে চান সেক্ষেত্রে আপনি ক্রেডিট কার্ড সুবিধাটা ও রাখুন, কারন এক্ষেত্রে ক্যাশ অন ডেলিভারির মাধ্যমে পেমেন্ট গ্রহন করার সুযোগ নেই আপনার।
৬. আপনার সাইট নোটিশ করুন –
আপনার সাইটটি রেডী হয়ে গেলে, আপনাকে এবার গুগল, বিং ইত্যাদি সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে সাবমিট করতে হবে। আর যদি আপনার সাইটটি অন্যান্য সাইটের মাধ্যমে লিংক করা থাকে সেক্ষেত্রে আর এটার প্রয়োজন নেই ।
সার্চ ইঞ্জিনে দেয়া ছাড়া ও আপনি প্রচারের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন । যত বেশী প্রচার করবেন, আপনার সাইটে ততবেশী ভিজিটর পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।