জেনে নিন সামনে নেতৃত্ব দিতে চাইলে আপনি কি কি বিষয় অনুশীলন করবেনঃ
১. আপনার সাথে সহকর্মীদের মতপার্থক্য হতে দিন-
যখন কোন কোম্পানীর কারোরই সত্য বলার ক্ষমতা থাকে না, সেটা কোম্পানীর দুর্যোগ টেনে নিয়ে আসে। সব সময় যদি আপনি প্রশংসা শুনতে থাকেন আপনার সর্ম্পকে তবে সেটা বিপদজনক। আপনি কোন কিছু বললেন সেটাকেই সর্বশেষ বলে ধরে নিবেন না, অন্যদের এর সমালোচনা করতে দিন। তাহলে আপনি সহজেই সমস্যাগুলো খুজে পাবেন আর এতে সহকর্মীদের অংশগ্রহনমূলক আচরণ তৈরি হবে।
২. একা ছেড়ে দিন-
আপনি যখন সামনে থেকে সবার নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তার মাঝেই কখনো কখনো তাদের সমস্যার মোকাবিলা করার জন্য সামনে এগিয়ে দিন, আর আপনি পেছন থেকে নেতৃত্ব দিন। একজন ভালো নেতা সেই, যে কখনো সামনে থেকে আবার কখনো পেছনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারে।
৩. ভুলগুলো ধরিয়ে দিন-
সহকর্মী ভুল করলে, সেই ভুলগুলো ধরিয়ে দিন বুঝিয়ে দিন কি করলে ভুলগুলো শোধরানো যাবে এবং ভবিষ্যতে ভুল না হবার জন্য কি কি বিষয় অনুসরণ করতে হবে। তাদের কে ভুলের মাধ্যমেই শিখতে দিন।
৪. অর্থপূর্ন সর্ম্পক তৈরি করুন-
সবার সাথেই কাজের মাধ্যমে অর্থপূর্ন সর্ম্পক তৈরি করুন, এতে সহকর্মীদের সাথে আপনার সম্পৃক্ততা বাড়বে। তাদের কথা বলার সুযোগ দিন এবং আপনি মনোযোগ সহকারে তাদের কথা শুনুন।
৫. জানা এবং শিখার জন্য উৎসুক থাকুন-
সহকর্মীদের ঝুকি নেবার জন্য কোন নির্দেশ দেবার আগে আপনি জানার চেষ্টা করুন এ পরিস্থিতিতে আপনি পড়লে নিজে নিরাপদ থেকে কিভাবে এ সমস্যার মুখোমুখি হতেন। বিভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে আগে নিজে ধারনা নিবেন, আত্মবিশ্বাসী হবেন তারপর সহকর্মীদের নির্দেশনা দিবেন।
৬. নিজেকে জানুন-
আপনার নিজের আচরণগত কোন ক্রটি আছে কিনা, আপনার উপর অন্যের বিশ্বাস কতটুকু, আপনার কোন আচরন অন্যের ভালো লাগে কোনটা ভালো লাগে না জানার চেষ্টা করুন। ভালো একজন দলনেতার উপর অন্যের আস্থা এবং ভাললাগা থাকাটা জরুরী। নিজের আচরণগত কোন সমস্যা অন্যের উপর প্রভাব বিস্তার করলে সেগুলো ঠিক করার উপর জোর দিন। আপনি দলনেতা বলে নিজেকে ক্রটির উর্দ্ধে ভাববেন না কখনো।
৭. লক্ষ্যের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখুন-
একই সময়ে একাধিক লক্ষ্য নির্ধারন না করে, নির্দিষ্ট সময়ে একটি লক্ষ্যের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখুন। একই সাথে অনেকগুলো লক্ষ্যের দিকে নিয়োজিত থাকলে, সবগুলোর দিকে সবাইকে পরিচালনা করা এবং সবার মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে আপনার জন্য।
৮. দলবদ্ধ হয়ে কাজ করতে উদ্ধুদ্ধ করুন-
চেষ্টা করুন সবার সাথে সবার সম্প্রীতির বন্ধনটুকু দৃঢ় করতে। কোথাও কোন সমস্যা মনে হলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করুন। সবার দিকে সমান মনোযোগ দিন। কারো যেন মনে না হয় আপনি কাউকে বেশী সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন।
৯. অনুশীলন করুন-
নিজের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করুন আরো বেশী করে। নিজের বর্তমান দক্ষতাকে অনুশীলন করুন এবং আরো নতুন নতুন বিষয়ে দক্ষ অর্জন করার জন্য সচেষ্ট হোন। এর মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধির সাথে সাথে আনুপাতিক হারে আপনার নেতৃত্ব গুনও বাড়বে।
১০. নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য করুন-
মানুষ তাকেই অনুসরন করে যাকে সে বিশ্বাস করতে পারে। নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলুন সবার কাছে। আপনার কথা এবং কাজের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখুন।
১১. রাগ নিয়ন্ত্রন করুন-
কেউ কোন ভুল করলে কিছুটা রাগ আপনি করতে পারেন তবে সেটা যেন মাত্রাতিরিক্ত না হয়। নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রনে রাখার চেষ্টা করুন।
“নেতা জন্মায় নাকি তৈরি হয়” সেটা নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্ক আছে। তবে জন্মের সাথে সাথে কেউ কেউ নেতৃত্ব গুণ নিয়ে জন্মাতে পারে আবার সময়ের সাথে সাথে কঠোর অনুশীলনের মাধ্যমে নেতৃত্বের শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে নেতৃত্ব গুণ তৈরি হয়। তাই আপনার যদি নেতৃত্ব গুন থেকে থাকে সেটাকে আরো বেশী ঝালাই করে নিন আর যদি নেতৃত্ব গুণ তৈরি করতে চান আরো বেশী অনুশীলন করুন।